লক্ষ্মীপুরে নির্যাতন করে গৃহবধূকে হত্যা।

নিউজ ডেক্সঃ দৈনিক লক্ষ্মীপুর সংবাদ। লক্ষ্মীপুরে স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের  নির্যাতনে শিকার হয়ে এক গৃহবধূর আত্মাহত্যা করেছে বলে জানা গেছে ।
গত ৪ ঠা নভেম্বর শুক্রবার দুপুর ১.৩০ মিনিটে চন্দ্রগঞ্জ থানাস্থ ১৪ নং মান্দারী ইউনিয়ন মটবী গ্রামে মাইজের বাড়িতে গৃহবধূ শারমিন আক্তার (২৫) স্বামীর বসত ঘরে বিষ পান করে। পরে তাকে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য  নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ৫ নভেম্বর নোয়াখালী জেলার মাইজদী হাসপাতালে প্রেরন করিলে মাইজদী হলি লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ঐ দিনেই রাত ১১.০০টার সময় শারমিন আক্তারের মৃত্যু হয়। এদিকে শারমিন আক্তারের মৃত্যুর খবর পেয়ে পিতা খোরশেদ আলম চন্দ্রগঞ্জ থানায় খবর পৌঁছালে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে শারমিনের লাশ থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ  লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্তের পর বাপের বাড়িতে শারমিনের লাশ দাপন করা হয়।
এবিষয়ে শারমিন আক্তারের পিতা মোঃ খোরশেদ আলম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। অপমৃত্যু মামলা নং ১২/২২ তাং ০৬-১১-২০২২। পুলিশ শারমিন আক্তারের স্বামী মোঃ হাসান (৩০) কে আটক করে।  আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠায়।
শারমিন আক্তার লক্ষ্মীপুর সদর ৬ নং বাংগাখাঁ ইউনিয়ন হোগল ডহরী গ্রামে চাঁদার বাড়ির খোরশেদ আলমের মেয়ে।
সরেজমিনে জানা যায়, মটবী মাইজের বাড়ির নুর আলমের বড় ছেলে মোঃ হাসান বিগত ৬ বছর পূর্বে শারমিন আক্তার কে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করে। হাসান ও শারমিনের সংসারে ইবনে আনাছ (বয়স ৪ বছর) ও আদিল মাহমুদ (বয়স ১ বছর) নামে ২টি ছেলে সন্তান রয়েছে। দাম্পত্য জীবনে তারা সুখে ছিলো না, প্রায় ঝগড়া লেগে থাকতো, একাধিক বার বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ঝগড়া মিমাংসা করা হয়েছিল।
ঘটনার দিন স্বামী শাশুড়ী সাথে পারিবারিক বিষয় নিয়ে শারমিনের সাথে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার মাঝে হাতাহাতি করে এক প্রর্যায় স্বামী হাসান ও শশুর বাড়ির লোকজন সহ শারমিন কে বেধড়ক মারধর করে।শারমিন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্বামীর ঘরে থাকা বিষ পান করে চটপট করিলে, লোকজন চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
এদিকে শারমিনের পিতা মাতা আত্মীয় স্বজনরা মনে করেন শারমিনের শশুর বাড়ির লোকজন শারমিনের উপর নির্যাতন করে, তাকে মারধর করে বিষ এনে জোর পূর্বক বিষ পান  করায়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
অন্য দিকে শারমিনের শাশুড়ী বলেন, শারমিনের কারণে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে টুকটাক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। ঘটনার দিনও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক প্রর্যায় শারমিন উত্তেজিত হয়ে খাবার প্লেট ছুড়ে মারে, সে প্লেট এসে আমার মাথায় পড়ে মাথা পেটে যায়। তখন হাসান তার বৌ কে চোড় থাপ্পড়  মারে সে অভিমানে আমাদের অজান্তে বিষ পান করে, তাকে বাছানোর জন্য আমরা সবাই চেষ্টা করি।
এবিষয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শারমিন আক্তারের পিতা খোরশেদ আলমের অভিযোগের ভিত্তিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।  লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের শেষ দাফনের জন্য পিতা খোরশেদ আলম কাছে প্রধান করা হয়েছে। স্বামী মোঃ হাসান কে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে হাজতে পেরন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *