রাজধানীর পথে পথে গো-খাদ্য

ঢাকা: কোরবানি ঈদের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে রাজধানী জুড়ে চলছে গো-খাদ্যের ব্যবসা।

পাড়া মহল্লায় অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্যবসা পরিবর্তন করে মৌসুমী এই ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন। তিনদিনের এই ব্যবসায় কিছু মুনাফা ও নগরবাসীকে সেবা দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। তবে গত বছরের মতো ব্যবসা নেই বলে জানিয়েছেন তারা।

 

মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর, পল্লবী, কাফরুল, তেজগাঁও, মোহাম্মাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

মৌসুমী এই ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নগরবাসীকে সেবা দিতে ও সামান্য কিছু মুনাফার আশায় ঈদে গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে তারা এ ব্যবসা করছেন। করোনার কারণে তাদের ব্যবসা তেমন ভালো চলছে না। পাড়া-মহল্লায় গতবারের তুলনায় গরু কম আসায় ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে পশ্চিম কাফরুলে গো-খাদ্য বিক্রেতা মো. রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, সারা বছর আমি অন্য ব্যবসা করি। কিন্তু কোরবানির ঈদ এলেই চার দিন আগে থেকে গো খাদ্য বিক্রি করি। এটা করে আমার মোটামুটি লাভ ভালোই থাকে। এছাড়া কোরবানির ঈদের আগের দুই থেকে তিন দিন অন্য ব্যবসা ভালো হয় না। তাই সামান্য লাভের আশায় কয়েক বছর ধরে এ ব্যবসা করছি। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর বিক্রি তেমন ভালো হচ্ছে না।

তিনি বলেন, করোনার কারণে পাড়া-মহল্লায় যারা একটি গরু কোরবানি দিতেন আর্থিক টানাপোড়েনে তারা এ বছর ভাগে কোরবানি দিচ্ছেন। এতে আমাদের ব্যবসায়ও অনেকটা প্রভাব পড়েছে বলেও জানান তিনি।

এলাকাবাসী প্রায় সবাই জানেন কোরবানির আগে দুই থেকে তিন দিন এখানে গো-খাদ্য বিক্রি হয়। তাই এলাকাবাসীকে সেবা দিয়ে যদি কিছু অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করা যায় তাতে ক্ষতির কিছু নেই বলেও জানান কাজীপাড়া বাস স্ট্যান্ডের গো-খাদ্য বিক্রেতা সুমন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিক্রি আগের চেয়ে অনেক কম। তিন থেকে চার বছর ধরে আশেপাশে হাট হয় না। আগে আশেপাশে হাট হতো গো-খাদ্য বিক্রি করে কুলাতে পারতাম না। তারপরও অনেকদিন ধরে এ ব্যবসায় জড়িত। এলাকাবাসী আমার কাছ থেকেই সব সময় গো-খাদ্য নেয়। তাই এলাকাবাসীকে সেবা দিতেই প্রতিবছরই এই সময়টায় আমি গো-খাদ্য বিক্রি করি।

রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে, গো-খাদ্যের দামের কোনো নির্ধারণ করা নেই। যে যেমন নিজ ইচ্ছা মতো দাম নিচ্ছেন। যাচাই-বাছাইয়ের কোনো সুযোগ না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ক্রেতারা।

এদিকে শেওড়াপাড়া বাস স্ট্যান্ড এ গরুর খাদ্য কিনতে আসা মো. জামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গতবারের চেয়ে গো খাদ্য প্রতি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। এগুলোর দাম ক্রেতাদের অজানা থাকায় সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন বিক্রেতারা।

অপরদিকে রাজধানীতে গরুর খড়ের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গমের ভুসি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, খেসারির তুষ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ধানের তুষ ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও কাঁঠাল পাতার আঁটি ২০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

তবে গো-খাদ্যের দাম একটু বেশি হলেও হাতের নাগালে পেয়ে ক্রেতারা খুশি। তাদের মতে দাম একটু বেশি হোক সমস্যা নেই পাড়া-মহল্লায় প্রতিটি মোড়ে মোড়ে গো-খাদ্য পাওয়ায় তাদের কষ্ট অনেকটাই কমেছে বলেও জানিয়েছেন ক্রেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *