মান্দারী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ভবন নির্মাণে বাধা ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের অভিযোগ।

নিউজ ডেক্সঃ দৈনিক লক্ষ্মীপুর সংবাদ।লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার ঐতিহ্য বাহি মান্দারী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় মাঠের পশ্চিম পাশে সরকারি একটি চার তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্কুল চলাকালীন সময়ে ভবনের বেইজ ডালাইর কাজ শুরু করা হয়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষা করার জন্য  কাজ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন, এবং নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি চৌকিদার দিয়ে নির্মাণ করা বেইজ গুলো ভেঙে পেলেন।

এছাড়া সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে একটি পোষ্ট করেন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ, এর নির্দেশে কাজ বন্ধ করা হয়েছে বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তিনি সকল ক্লাস রুমে প্রবেশ করেন এবং ছাত্রছাত্রীদের মাঠের ব্যাপারে মতামত চান। এসময় কয়েক জন সাবেক ছাত্ররা স্যোসালমিডিয়া ফেইজবুক লাইভে এসে সম্প্রচার করতে থাকেন।

এই সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন কে গালমন্দ করেন বলে অভিযোগ উঠে।সহকারী শিক্ষক শাহাদাত হোসেন  বলেন, স্কুল বিরতির শেষে  ছাত্রছাত্রীদের কে ক্লাসে আসার জন্য স্কুল গেইটের পাশে গিয়ে ডাকলে তখন আমাদের কয়েকজন সাবেক ছাত্র আমাকে খুব খারাপ ভাষায় কথা বলে এবং আমাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে।

বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক মনিরুল বাহার বলেন, আমি যখন হেটে ক্লাসে যাচ্ছি ঠিক তখন অনেক ছেলে মেয়েদের একত্রিত দেখতে পাই মাঠে, তাদেরকে ক্লাসে ডাকতে গিয়ে দেখি আমাদের সহকারী শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন কে খুব রাগান্বিত ভাষায় ধমক দিচ্ছেন এই বিদ্যালয়ের (নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক ) সাবেক কয়েক জন ছাত্র, পরে আমি তাদের দিকে এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও খারাপ ভাষা ব্যাবহার করে।

এই ভবন নির্মাণ বিষয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের বলেন, ঐতিহ্যবাহী মান্দারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় লক্ষ্মীপুর জেলার একটি স্বনামধন্য স্কুল। এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫২৪ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে।এই বিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী দেশে বিদেশে ছড়িয়ে আছে সম্মানের সাথে, আমি ও এই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ছিলাম। এই বছর অত্র প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ও প্রকৌশল কর্তৃক তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এই ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল মাঠের দক্ষিণ -পশ্চিম পাশে। কিন্তু তাতে স্কুলের মূল গেইট থাকায় মাঠের দক্ষিণ -পশ্চিম অংশ ব্যবহার করা যায় না।তারপর আলোচনা হয় মাঠের পূর্ব পাশে বিদ্যালয়ের টিন শেড ভিটিতে করার ব্যাপারে। কিন্তু তাতেও দেখা যায় বিদ্যালয়ের ৩ নং ভবন এবং নির্মাণাধীন অডিটোরিয়াম পিছনে পড়ে যায়। তাই কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন দিক চিন্তা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে মাঠের পশ্চিম দিকে যেই ৮ ফুট পথ এবং ড্রেন আছে তাহা সহ আরও ২০ ফুট জায়গা নিয়ে মোট ৩০ ফুটে নতুন ভবন নির্মাণ করার। তার পরিবর্তে মাঠের পূর্ব পাশে পুরাতন টিন শেডের ৩০ ফুট ভিটি মাঠের জন্য উন্মুক্ত করে ইতিমধ্যে তা সমান করে মাঠের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। আমরা বলতে পারি মাঠ পূর্বের থেকে একফুট ও ছোট হবে না।
কিন্তু এই বিষয়কে কেন্দ্র করে ইস্যু সৃষ্টি করা হয় এবং শিক্ষককে অপমান করা হয় তা অত্যন্ত দুঃখ জনক।আমরা সকলকে সাথে নিয়ে এই বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাই এবং সকলের সহযোগিতা কামনা করি।

এই বিষয় মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী সঙ্গে যোগাযোগ করে না পাওয়া তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রনেতা আবু তালেব বলেন, খেলার মাঠ রেখে তারপরে ভবন নির্মাণ করতে  হবে। আমাদের এই স্কুলের আশপাশে কোন খেলার মাঠ নেই, তাই আমাদের দাবি স্কুলের খেলার মাঠ রেখে তারপরে ভবন নির্মাণ করতে হবে। শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার কথা সত্য নয়।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বলেন,  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ভবন নির্মাণের জন্য আলোচনার মাধ্যমে খেলার মাঠ রেখে ভবন নির্মাণের  সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যখন কাজে বাধা এসেছে  আমার জেলা প্রশাসককে অবগত করেছি। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *