লক্ষ্মীপুরে খাল খননে বাধা, কৃষি উৎপাদন ব্যহাতসহ জলাবদ্ধতার শঙ্কা।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ-লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ও তোরাবগঞ্জের জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিরসন এবং শুষ্ক মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে “তুলাতুলি”খাল খননে উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হলেও এখন বাধার মুখে পড়েছে প্রকল্পটি।

স্থানীয় দখলদারদের বাধায় গত ৪ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে খনন কাজ। ফলে কাজ থেমে আছে,অচল হয়ে পড়েছে ২টি এস্কেভেটর মেশিন। বিপাকে পড়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাজেরা এন্টারপ্রাইজ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, আগের বছরের মতো এবারও বন্যা ও জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে হাজারো পরিবার। তারা দ্রুত ১০০ মিটারের দখলদার উচ্ছেদে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, চর লরেন্স ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের সীমানা ঘেঁষে বয়ে চলা তুলাতুলি খালটি দীর্ঘদিন ধরে দখল ও দূষণে ভরাট হয়ে পড়ে। এর ফলে গত বছরের বন্যায় ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার এক মাসেরও বেশি সময় পানিবন্দি অবস্থায় ছিল।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস ধরে খাল খননের কাজ চলমান। কাজের শেষ পর্যায়ে এসে লরেন্স ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সেলিম রোডের দক্ষিণ ও উত্তরে প্রায় ১০০ মিটার খালের জায়গা দখল করে রেখেছেন জামাল, কামাল ও সালাম নামে কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের বাধায় কাজ বন্ধ রয়েছে।
এর আগেও কয়েকটি স্থানে বাধার সম্মুখীন হয় প্রকল্পটি। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাহাত উজ জামান সরেজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলা সার্ভেয়ারকে অবৈধ দখল চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সার্ভেয়ার আবদুল্লাহ আল মামুন পরিমাপ শেষে জমির মালিকানা নির্ধারণ করে খালের সীমা বুঝিয়ে দেন বিএডিসি’কে।
তবে এর পরও বড় গাছ না কাটার অজুহাতে খাল খননে বাধা সৃষ্টি করছেন জামাল ও কামাল। তারা দাবি করছেন, খালটি সরিয়ে পশ্চিম দিকে নতুন করে খনন করতে হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, খালের দুই পাশে দখল ও গৃহনির্মাণের ফলে খাল সংকুচিত হয়ে গেছে। তবে খালের প্রাকৃতিক চ্যানেল ও অস্তিত্ব এখনো দৃশ্যমান রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, জামাল ও কামাল পূর্ব পাশে বাড়ি তৈরি করে খালের জায়গা দখল করেছেন। সেলিম রোড ও নুরিয়া রোড সংলগ্ন এলাকাতেও খালের জায়গায় পুকুর ও বসতবাড়ি গড়ে উঠেছে। স্থানীয় অটোরিকশা চালক মোঃসালামের বাবার বিরুদ্ধে খালের জায়গা রেকর্ড করে বিক্রির অভিযোগও উঠেছে।
এদিকে খাল খননে বাধা দেওয়া কামাল হোসেন দাবি করেন,“এই জমি এখন আমাদের নামে রেকর্ড হয়ে গেছে,তাই কাজ বন্ধ করেছি।”
তুলাতুলি খালের খনন কাজের তদারকি করা কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃফজলুল কাদের বাপ্পি বলেন,“৮ কিলোমিটার খালের মাত্র সামান্য অংশ বাকী রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে কিছু ব্যক্তি কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে।”
বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,“জলাবদ্ধতা নিরসন ও সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে এই খাল খনন অত্যন্ত জরুরি। কয়েকটি স্পটে বাধা পেয়েছি, তবে এখন সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা এই ১০০ মিটার জায়গা।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃরাহাত উজ জামান বলেন,সরকারি কাজে কেউ যদি বাধা দেয়, যত বাধাই হোক,আমরা কেটে দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *