লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগের মাছঘাট বিএনপির দখলে, সেনা অভিযান।

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ নেতাদের মালিকানাধীন দুইটি মাছ ঘাট দখলে নিয়েছে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। মাছ ঘাট দখল করে ঘাটের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ উঠে। ঘাটে জেলেদের মাছ বিক্রির শতকরা ৭ থেকে ১০ টাকা হাতে কমিশন হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এর প্রতিকার চেয়ে মালিকরা রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সেনা বাহিনীর ক্যাম্পে আলাদা আলাদা অভিযোগ করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সেনাবাহিনী একটি ঘাটে অভিযানে গেলে কৃষকদল নেতা শামীম গাজিসহ অন্যরা সটকে পড়েন।
দখল হয়েছে- মেঘনা উপকূলীয় রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশীতে আলতাফ মাস্টার ঘাট ও রামগতি উপজেলার বড়খেড়ি ইউনিয়নের আবদুল ওয়াহেদের ঘাট। আলতাফ হোসেন হাওলাদার উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও আবদুল ওয়াহেদ রামগতি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। মাছ শিকারি জেলেদের কমপক্ষে ৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে বলে- ওই দুই মাছঘাটের মালিক জানিয়েছেন।
এদিকে ১৫ সেপ্টেম্বর কমলনগরে মাছঘাট দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদলের সদস্য পদ থেকে হেলাল উদ্দিনকে সাময়িক বহিষ্কার করে জেলা যুবদল। হেলাল উপজেলার সাহেবের হাট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহবায়ক ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম হোসেন গাজী, বিএনপি নেতা এবাদ উল্যা গাজী, উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামীম গাজির নেতৃত্বে গত মঙ্গলবার শতাধিক নেতাকর্মী আলতাফ হাওলাদারের ঘাট দখল করে নেয়।
কৃষকদল নেতা জিএম শামীম দাবি করেন, চরবংশীতে তার ওপর কথা বলা বিএনপির কেউ নেই। ২০০৭ সালে তার মাছঘাট ছিল, এখন আবার তিনি ফিরিয়ে নিয়েছেন। নিজেদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে তাকে দখলদার-চাঁদাবাজ বলা হচ্ছে।
আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘৯ বছর ধরে আমি ঘাটটি পরিচালনা করছি। নদীতে জেলেদের কাছে আমাদের কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এবাদ উল্যা, শামীমসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘাটটি দখলে নিয়েছে। তারা শুধু কাগজ-কলম পুঁজি নিয়ে ঘাটে বসে গেছে। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছি।’
রায়পুর সেনা বাহিনীর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজিদ হাসান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে আমরা ওই মাছঘাটে গিয়েছি। খবর পেয়ে দখলদাররা পালিয়ে গেছে। গদিঘর থেকে কিছু টাকা, হিসাবের বইসহ আলামত জব্দ করা হয়। দুইপক্ষকেই প্রমানাদিসহ ক্যাম্পে আসার জন্য বলা হলেও অভিযুক্তরা আসেনি।’
রামগতি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মীর আক্তার হোসেন বাচ্চু, বড়খেড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক নুরনবী, যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান, শেখ ফরিদ, যুবদলের সভাপতি গরিব হোসেন রাসেল, সাধারণ সম্পাদক জমির আলী দলবল নিয়ে আবদুল ওয়াহেদের ঘাট দখলে নেয়। এসময় গদিঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। যদিও বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান দাবি করেন, অভিযোগ সত্য নয়।
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ‘ঘাটে আমাদের ৩ কোটি টাকার যৌথ ব্যবসার বিনিয়োগ রয়েছে। বিএনপি লোকজন চিহিৃত ডাকাত-সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে ঘাটটি করেছেন। তারা বেপরোয়া, কারো কথা শুনে না। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জানিয়েও কোনো সুফল আসেনি।’
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, ‘মাছঘাট দখলের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। যাদের কাগজপত্র আছে-তারা এটি ভোগ করার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *